অস্ট্রেলিয়ার প্রাচীন দুর্গের মধ্যে পোর্ট আর্থার অন্যতম। যেখানে হাজার হাজার মানুষ প্রতি বছর এই ঐতিহাসিক সাইট পরিদর্শন করতে আসেন। এবং তাদের মধ্যে অনেকেই অলৌকিক ও অতিপ্রাকৃতিক অভিজ্ঞতার দাবি তোলেন।
পোর্ট আর্থারের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এটি ১৮৩০ সালে একটি টিম্বার স্টেশন হিসাবে শুরু হয়েছিল এবং পরবর্তী বিশ বছর ধরে এটি অস্ট্রেলিয়ার একটি কুখ্যাত কারাগার হিসেবে চালু করা হয়। এই কারাগারে অন্যান্য কারাগার থেকে আসা ক্ষুদে দোষী এবং দাগী অপরাধীদের সাথে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে কঠোর অপরাধীদেরকে রাখা হয়েছিল।
এই অপরাধিদের অনেকেই এখানে অপঘাতে মারা যায়। তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয় নির্যাতন, ভয়, ক্ষুধা ইত্যাদি। এর ফলে এই কারাগারে থাকা অন্যান্যরা কিছু ভূতুড়ে কান্ড-কান্ডের মুখোমুখি হন। কেউ কেউ বলেন এখানে ওই মারা যাওয়া কয়েদিদের আত্মা ঘুরে বেড়ায়।
স্টেটলাইন তাসমানিয়া যখন ২০০৩ সালে সাইটটি পরিদর্শন করেছিলেন। যারা সাইটটি ভিজিট করতে আসেন তাঁরা অনেকেই তার কাছে বিভিন্ন ভূতুড়ে ও অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা বর্ণনা করতে থাকেন।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বলা ঘটনা হচ্ছে ব্লু লেডি দর্শন
তাঁরা বলেন যে রাত গভীর হলে করিডর দিয়ে একজন মহিলা নীল গাউন পরে ঘুরতে দেখা যায়। কৌতূহল কিছু মানুষ যারা এই নীল ড্রেস পরা মহিলাকে অনুসরণ করেছিলেন, তারা দাবি করেন যে দুর্গের শেষ মাথায় যেয়ে সে দেয়াল ভেদ করে মিলিয়ে যেতে দেখেছে।
এই 'ব্লু লেডি'কে দেখেছেন যাকে কেউ কেউ বিশ্বাস করে যে পোর্ট আর্থার অ্যাকাউন্ট্যান্টের সাথে বিয়ে করা একজন মহিলার ভূত। ১৮০০-এর দশকে এই দম্পতি পেনাল কলোনিতে বসবাস করতেন।
কেউ কেউ বলেন:-"আমি একটি ক্রিনোলিন পোষাক এবং একটি হাত প্রসারিত একটি বনেটে একটি মহিলার চিত্র দেখেছি।"
আরেকজন বলেন:-"মহিলাটির কোমর থেকে মাটি পর্যন্ত ফ্যাকাশে পোশাক ছিল।দীর্ঘ নীল/ধূসর পোষাক পরা একজন যুবতী মহিলার চিত্র যা বিল্ডিংয়ের পিছনের দরজার বাইরে তাকিয়ে আছে।"
কিংবদন্তি হল মহিলা এবং তার সন্তান প্রসবের সময় মারা যায় এবং তার আত্মা অনাগত সন্তানের খোঁজে দিনের পর দিন সেই নির্দিষ্ট ভবনে ফিরে আসে।
অন্যরা কমান্ড্যান্টের বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে নিচে পড়ে যাওয়া একটি ছোট্ট মেয়েকে দেখেছে বলে জানিয়েছে।
তাদের ভাষায়।
"আমি অনুভব করলাম একটি ছোট মেয়ে সিঁড়ির নীচে শুয়ে আছে," একজন ব্যক্তি বলেছিলেন। "তিনি রক্তের পুকুরে শুয়ে ছিলেন। তার ডান হাত ভেঙে গেছে। সে সত্যিই ভয় পেয়েছে।"
"আমি পথ হাঁটতে হাঁটতে ছোট্ট মেয়েটির কথা শুনতে পেলাম।"
"তার হাত তার নীচে পেঁচানো হয়েছে। আমার মনে হয়েছিল আমার বাহু তার।"
২০১৫ সালে একজন দর্শনার্থী ভ্রমণের সময় কিছু ভৌতিক দৃশ্য ক্যামেরায় বন্দী করেছিলেন এবং সেগুলি 'অস্ট্রেলিয়ান হন্টিংস'-এ ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছিলেন। একটি ফটোতে একটি ছোট ছেলের একটি ঘরের মধ্যে লুকিয়ে থাকা চিত্র দেখায়, অন্য একটি ছবিতে একটি ভুতুড়ে সাদা ধোঁয়া।
তবে সবচেয়ে শরীর হিম করা ছবিটি হল বেশ কয়েকটি শিশুর মতো কালো অবয়ব যারা একটি ভবনের জানালা দিয়ে উঁকি দিচ্ছে।
আপনি পোর্ট আর্থারের কিংবদন্তি, এর দীর্ঘ ইতিহাস এবং ভুতুড়ে স্থাপত্যের কথা বিশ্বাস করুন বা না করুন, আপনার মেরুদন্ডে শিহরণ জাগানোর জন্য যথেষ্ট।